Showing posts with label patients. Show all posts
Showing posts with label patients. Show all posts

Friday, March 3, 2023

ধৈর্যশীলতা আল্লাহতায়ালার বড় একটি আশীর্বাদ বা নেয়ামত...

আল্লাহতায়ালা নিজেই বলেছেন যে, নিশ্চয়ই আমি ধৈর্যশীলদের সাথে আছি এবং ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দান করুন। যদিও ধৈর্যশীলতার কথা বলছি কিন্তু আমি নিজেও একজন এত ধৈর্যশীল ব্যক্তি না। আমার দেখা সেরা দুজন ধৈর্যশীলদের মধ্যে একজন ছিলেন আমার বাবা এবং আরেকজন আমার বড় বোন। আমি আমার জীবদ্দশায় কখনোই আমার বাবাকে এবং বড় বোনকে রাগান্বিত হতে দেখিনি। এমনকি উ‌‌নারা রাগ করেছেন বা কষ্ট পেয়েছেন এটাও উপলব্ধি করতে পারিনি। ফেইস ইজ দ্যা ইনডেক্স অফ মাইন্ড বা মুখ মানুষের মনের কথা বলে দেয়, মনে হচ্ছে এটা কেবলমাত্র আমার জন্যই প্রযোজ্য। কেননা মানুষ আমার ফেইস বা মুখমণ্ডল দেখেই বুঝে ফেলে যে আমি রাগ করেছি নাকি আনন্দিত হয়েছি। যাইহোক, আসুন কিছু ধৈর্যশীলতার প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা করি।

প্রেক্ষাপট-১: 
কিছুদিন আগে ইউটিউবে দেখলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভার লোকজন পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে গিয়েছিলেন, সম্ভবত সেটা একুশে ফেব্রুয়ারি ছিল। সেখানে একজন সিনিয়র ব্যক্তি পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে গিয়ে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল, পরে তিনি কোনমতে নিজেকে সামলে নিয়েছিলেন। অপরদিকে মতিয়া চৌধুরী ম্যাডাম তো একদম পড়েই গিয়েছিলেন। পরে তিনি নিজেকে সামলে নিয়েছিলেন। যেখানে স্বয়ং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ  সরকারের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন, সেখানেও ধৈর্যশীলতার কিছুটা অভাব পরিলক্ষিত হয়েছিল বলে আমি মনে করি, তবে নাও হতে পারে। রিপোর্টার রিপোর্টের শেষ প্রান্তে বলেছিলেন এই ধাক্কাধাক্কির কালচার কবে শেষ হবে। 

প্রেক্ষাপট-২:
সোনালী ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয় বা লোকাল অফিস শাখা, মতিঝিলে গিয়েছিলাম একটা কাজের জন্য। বলে রাখা ভালো যে সোনালী ব্যাংকের সার্ভিসের ভালোই উন্নতি সাধন হয়েছে। যাইহোক ঘটনায় ফিরে আসি, আমি এবং আমার ইউনিভার্সিটির এক ছোট ভাই কাম ফ্রেন্ড লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা জমা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ করেই মাঝ বয়সী একজন ভদ্রলোক লাইনের মাঝে ধাক্কাধাক্কি করছিলেন। আমার ইউনিভার্সিটির ভাই উনাকে একটু ধমকের সুরেই বলেছিলেন, ভাই একটু ধৈর্য ধরেন। উনি রেগে গিয়ে উনার পরিচয় দিচ্ছিলেন যে আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিজিএম। আমি চাইলে সরাসরি টাকা জমা দিতে পারতাম কিন্তু আমি নিয়মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তাই লাইনে দাঁড়িয়েছি। আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের কথা শুনেই আমার অফিসের আইডি কার্ডটি পকেটে ঢুকিয়ে রেখেছিলাম। কেননা অযথা ঝামেলায় জড়িয়ে লাভ নেই, আর কথায় আছে না "নিজে বাঁচলে বাবার নাম"। যাইহোক ধৈর্যশীলতার পরিচয় দিয়েছিলাম।

প্রেক্ষাপট-৩:
রাত ১টা মতিঝিল আরামবাগ গ্রীনলাইন বাসের কাউন্টার, সাজেক-খাগড়াছড়ি যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। বাস অলরেডি ২ ঘন্টা দেরি করে এসেছে এবং আসা মাত্রই সমস্ত যাত্রীগণ পোটলা-পাটলি আই মিন ব্যাগ এন্ড লাগেজ সহ বাসের দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। বাসের হেলপার লাগেজের ডিক্কি খুলে যে লাগেজ গুলো রাখবে সে জায়গায়ও পাচ্ছে না। অথচ সবাই অনেক আগেই যার যার টিকিটগুলো কেটে রেখেছিলেন। আমি যেহেতু জায়গা পাইনি তাই আমি পিছনে দাঁড়িয়ে সবকিছু দেখছিলাম, তখন হঠাৎ করে হেলপার আমাকে বলল দেখছেন স্যার। আমি উত্তর দিলাম, দেখতেছি। যাই হোক অনেক কষ্টে হেল্পার ব্যাটা লাগেজ গুলো রেখেছিল। বাসে উঠার সময় একই অবস্থা সবাই একসাথে হুরমুর করে উঠতে যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল আগে উঠতে পারলে আগে সিট দখল করতে পারবে। যদিও সবাই বেশ অনেকদিন আগে থেকেই টিকিটগুলো কেটে রেখেছিলেন।

যাই হোক, অনেক জ্ঞানগর্ভ কথা বলে যাচ্ছি। আসলে বাস্তবিক জীবনে ধৈর্যশীল হওয়াটা অনেকটাই কঠিন কাজ। কেননা কোন কাজ করতে গিয়ে বিলম্বিত হলে, সাধারণত রেফারেন্স দিয়ে বা স্পিড মানি বা বিবিধ পন্থায় যত দ্রুত সম্ভব কাজ গুলো সম্পন্ন করতে সবাই সব সময় সচেষ্ট থাকে। আমরা মহান আল্লাহতায়ালার কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমি সহ আমাদের সকলকে অনেক বেশি ধৈর্যশীলতা দান করেন।