একদা গোপাল ভাঁড় শুনতে পেল যে বাজারের সবচেয়ে বড় আলুর গুদামে আগুন লেগেছে। অগত্যা সে দৌড়াতে লাগলো আলুর গুদামের দিকে। সেখানে গিয়ে দেখলো আলুর গুদাম সম্পূর্ণ পুড়ে শেষ। এরপর সে পোড়া আলুর সন্ধান করতে লাগলো এবং আয়েশ করে পেট পূর্ণ করে পোড়া আলু খেলো। ফেরার পথে লোকদের উদ্দেশ্য করে বলতে লাগলো "আবার কবে আগুন লাগবে"।
আজকে সকালে টিভিতে দেখলাম বঙ্গবাজারে স্মরণ কালের সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। শত শত পরিবার মুহুর্তের মধ্যে নিঃস্ব হয়ে গেল। এবারের ঈদটা তাদের জন্য অন্যরকম হতে পারতো কিন্তু অনাকাঙ্খিত অগ্নিকাণ্ড সবকিছুই লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেল। ফায়ার সার্ভিস আগুন দেরিতে নিয়ন্ত্রণে আনার তিনটি প্রধান কারণ উল্লেখ করেছেন। মজার ব্যাপার, একটি কারণ হচ্ছে অতি উৎসাহী জনগণের ভিড়। সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করলেন কেন এসেছেন; উত্তরে "এত ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড আমরা দেখতে আসছি, ক্ষয়ক্ষতির পরিমান কি কি তা জানতে"...😬🤐 কোন সাহায্য করতে নয়, বরং বাধাগ্রস্ত করতে...😓। এরমধ্যেই অনেক অতি উৎসাহী লোকজন আবার আগুন নিয়ন্ত্রণের পর পুড়ে যাওয়া মালামাল গুলো থেকে লুটপাট ও চুরি করা শুরু করেছে। যারা সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন, তাদেরকে সান্তনা দেওয়া তো দূরে থাক; উল্টো তাদের যা অবশিষ্ট ছিল সেগুলোও লুটপাট বা চুরি হয়ে গেল। এই অতি উৎসাহী লোকজনের কাছে পুড়ে যাওয়া মালামাল গুলো নেওয়া হচ্ছে, গোপাল ভাঁড়ের পুড়ে যাওয়া আলু খাওয়ার মতই। হয়তো মনে মনে ভাবছে ভালোই হয়েছে, এই চড়া মূল্যের বাজারে বিনে পয়সায় ঈদের শপিং হয়ে গেল। আর কিছু মালামাল বিক্রিও করা যাবে।
আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানের পরিধিতে, বিনা অনুমতিতে কাহারও কোন কিছুতেই হাত দেওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আল্লাহতালা আমাদের সকলকে সঠিক জ্ঞান ও উপলব্ধি দান করুন, আমীন।
No comments:
Post a Comment