Friday, December 29, 2023

নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ঘেরা সাগরকন্যা কুয়াকাটা...


সৌন্দর্যে সমাবেষ্টিত সাগরকন্যা কুয়াকাটা, যেখানে একই সাথে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের নয়নাভিরাম দৃশ্যে  অবলোকন করা যায়। কুয়াকাটা পৌরসভা, পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর থানায় অবস্থিত। ঢাকা থেকে প্রায় ৩০০শ কিলোমিটার দক্ষিনে অবস্থিত। এটি বরিশাল শহর থেকে প্রায় ১১০ কিলোমিটার দক্ষিণ এবং পটুয়াখালী শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। ঢাকা থেকে বাসে বা গাড়িতে করে পদ্মা সেতু হয়ে বরিশাল শহরের ভেতর দিয়ে সরাসরি কুয়াকাটায় যাওয়া যায় এবং রাস্তা বেশ ভালো আর ভাঙ্গা অংশগুলো মেরামত করা হয়েছে। 

কুয়াকাটায় বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে নতুন আবিষ্কৃত চর বিজয় যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত হতে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দক্ষিনে বঙ্গোপসাগরের মধ্যে অবস্থিত। প্রায় আড়াই বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই চরটি লাল কাঁকড়ার চর নামে পরিচিত। এখানে অনেক পাখিও দেখতে পাওয়া যায়। এখানে স্পিডবোট বা ট্রলারের মাধ্যমে আসতে হবে, স্পিডবোট দিয়ে যেতে আসতে প্রায় এক ঘন্টার মত সময় লাগবে। 

কুয়াকাটার পশ্চিম প্রান্তে তিন নদীর মাথা বা মোহনা, সুন্দরবনের পূর্বংশ এবং এটি ফাতরার চর নামে পরিচিত, ঝাউবন, ঝিনুক চর, ম্যানগ্রোভ বন, লেবুর বন এবং শুটকি পল্লী অবস্থিত। লেবুর বন ও শুটকি পল্লী পাশাপাশি অবস্থিত এবং এখান থেকেই সুন্দর ভাবে সূর্যাস্ত দেখা যায়। এখান থেকে সূর্যাস্ত দেখার পাশাপাশি মাছ ভাজা খেতে পারেন, তবে দাম তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। লেবুর বনে টিনের তৈরী একটি মসজিদ রয়েছে। 

পূর্বপ্রান্তে গঙ্গামতি সৈকত, গঙ্গামতি লেক এবং ম্যানগ্রোভ বন অবস্থিত। ম্যানগ্রোভ বনটি ২০০৭ সালে সিডরের কারণে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায় এবং ধ্বংসাবশেষ সারি সারি বৃক্ষগুলো  ধ্বংসযজ্ঞের সাক্ষী হয়ে এখনো বিদ্যমান।  গঙ্গামতি সৈকত থেকে সুন্দরভাবে সূর্যোদয় অবলোকন করা যায়। সূর্যোদয় দেখতে হলে আপনাকে সূর্যোদয়ের প্রায় একঘন্টা আগে রওনা দিতে হবে। কুয়াকাটা চৌরাস্তা থেকে গঙ্গামতি সৈকতের দূরত্ব প্রায় সাড়ে আট কিলোমিটার এবং রাস্তা বেশ খারাপ। ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা দিয়ে যেতে হবে। আপনারা চাইলে গঙ্গামতি লেক পার হয়ে কাউয়ার চর প্রথম মাথায় যেতে পারেন। এখানেও লাল কাঁকড়া দেখতে পারবেন, তবে চর বিজয়ের চেয়ে অনেক কম।

সূর্যোদয় দেখে ফেরার পথে আপনারা ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সার মাধ্যমে মিশ্রি পাড়ায় রাখাইন পল্লীতে যেতে পারেন। মিশ্রি পাড়ায় রাখাইনদের তাঁত পল্লী, কুয়াকাটায় রাখাইনদের ইতিহাস সম্বলিত একটি জাদুঘর, গৌতম বুদ্ধের ৬০ ফিট মূর্তি অবস্থিত। 

কুয়াকাটার চৌরাস্তার পাশেই প্রায় ৩৫ মণ ওজনের গৌতম বুদ্ধের একটি মূর্তি রয়েছে যা স্বর্ণ এবং পিতল দিয়ে ১৯২৪ সালে তৈরি করা হয়েছিল। বৌদ্ধ মন্দিরের প্রবেশপথে বাঁদিকে একটি পানির কুয়া কাটা হয়েছিল যার নাম কাটা মাথার কুয়া এবং এই কুয়ার নাম অনুসারে এই অঞ্চলের নাম কুয়াকাটা। বৌদ্ধ মন্দিরের পাশে পুরনো একটি নৌকা রয়েছে, এটি ৫০টি নৌকার মধ্যে মধ্যে একটি নৌকা যেগুলো দিয়ে প্রায় ১২০ টি রাখাইন পরিবার বার্মিজ সৈন্যদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে ১৭৭৪ সালে আরকান রাজ্য থেকে সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে এ অঞ্চল এসেছিল। 

কুয়াকাটা ভ্রমণকালে আমাদেরকে বেশ কিছু অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল...
১. এখানে আবাসন বা হোটেল ভাড়া অস্বাভাবিকভাবে বেশি এবং আপনাকে ভালোভাবে জেনে শুনে ও দর কষাকষি করে আবাসন বা হোটেল ঠিক করতে হবে। অন্যথায় আপনি আর্থিকভাবে ভালই ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। 
২. মূল্যের তুলনায় হোটেলের পরিবেশ এবং সুবিধাদি বেশ অপ্রতুল। 
৩. উন্নত মানের খাবার-দাবার ব্যবস্থাও বেশ অপ্রতুল এবং মূল্য আকাশচুম্বী। ওখানকার কোন খাবারেই আমাদের ভালো লাগেনি এবং সুস্বাদুও ছিলনা।
৪. সমুদ্র সৈকত বা অন্যান্য দর্শনীয় স্থানে ফটোগ্রাফারদের ব্যাপারে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করবেন, কেননা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে আপনাকে ফাঁদে বা বেশ বেকায়দায় ফেলতে পারে। এদের সাথে ভালোভাবে কথা বলে ছবি তোলার ব্যবস্থা করবেন, অন্যথায় আপনার কাছ থেকে অনেক অর্থ হাতিয়ে নিতে পারে। 
৫. স্পিডবোট বা ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সার ভাড়াও বেশ চড়া। ভালোভাবে দরদাম কষে ভাড়া ঠিক করবেন। 

কুয়াকাটা অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত, কিন্তু পর্যটকদের বিভিন্ন ধরনের সুবিধাদি বেশ অপ্রতুল। যদিও প্রশাসন বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ শুরু করেছেন। আশা করি আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে কুয়াকাটা অনন্য একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।

Sunday, November 26, 2023

18th #BIGF 2023 Certificate Ceremony...

It is really a pleasure to receive the certificate from H.E. Mr. Helel Hakimi, Deputy #Embassador, The Royal Embassy of #Saudi #Arabia in Bangladesh,  Brig Gen Mr. Mohammad Khalil-Ur-Rahman, NDC, PSC, TE, Director General, Bangladesh Telecommunication Regulatory Commission (#BTRC) and Mr. Mohammad Abdul Haque Anu, Secretary General, Bangladesh Internet Governance Forum (#BIGF)