তাওয়াসসুল মানে হলো — আল্লাহর নিকটে পৌঁছানোর জন্য কোনো মাধ্যম গ্রহণ করা।
এই মাধ্যম হতে পারে আল্লাহর নাম, গুণ, নিজের নেক আমল, বা জীবিত অবস্থায় কোনো সৎ ব্যক্তির দো‘আ।
শরীয়তসম্মত তাওয়াসসুলের ধরন:
১. আল্লাহর নাম ও গুণ দ্বারা দো‘আ করা:
যেমন — “হে রহমান, হে রহীম! তুমি রহম করো।”
📖 (সূরা আল-আরাফ 7:180)
২. নিজের নেক আমল দ্বারা তাওয়াসসুল করা: যেমন তিন ব্যক্তির গুহায় আটকে পড়ার হাদীস, যেখানে তারা নিজেদের নেক কাজের কথা বলে দো‘আ করেছিল — আল্লাহ তাদের দো‘আ কবুল করে পাথর সরিয়ে দেন।
📖 (সহীহ আল-বুখারী 5974, সহীহ মুসলিম 2743)
৩. জীবিত সৎ ব্যক্তির দো‘আ চাওয়া:
যেমন সাহাবাগণ নবী ﷺ জীবিত থাকাকালে তাঁর কাছে দো‘আ চাইতেন।
📖 (সহীহ আল-বুখারী 1010)
তাওয়াসসুল যা শির্ক
যদি কেউ মৃত ব্যক্তির কাছে বা কোনো ওলির কাছে গিয়ে বলে — “হে পীর সাহেব, আমাকে সাহায্য করুন, আমার রোগ সারিয়ে দিন!”
তাহলে এটি শির্কে আকবর (বড় শির্ক) — কারণ সাহায্য প্রার্থনা করা ইবাদতের অংশ, আর ইবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট।
📖 আল্লাহ বলেন: “আর যারা আল্লাহ ছাড়া অন্য অভিভাবক গ্রহণ করে, তারা বলে — ‘আমরা তো কেবল তাদেরই উপাসনা করি যাতে তারা আমাদের আল্লাহর নিকটে পৌঁছে দেয়।’”
— সূরা আয-যুমার ৩
এমন কাজ আল্লাহর একত্ব (তাওহিদ) নষ্ট করে দেয়।
তাওয়াসসুল যা বিদ‘আহ
যদি কেউ আল্লাহকেই ডাকে, কিন্তু এমন উপায় ব্যবহার করে যা নবী ﷺ ও সাহাবারা কখনো করেননি —
যেমন: কবরের পাশে গিয়ে দো‘আ করা এই ভেবে যে সেখানে দো‘আ দ্রুত কবুল হবে, বা বলা, “হে আল্লাহ, আমি তোমাকে নবীর মর্যাদার দোহাই দিয়ে চাই”, তাহলে এটা বিদ‘আহ (নব উদ্ভাবন)।
📖 রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: “যে ব্যক্তি আমাদের এই দ্বীনে এমন কিছু সংযোজন করবে যা এর অন্তর্ভুক্ত নয়, তা প্রত্যাখ্যাত হবে।”
— সহীহ আল-বুখারী ২৬৯৭, সহীহ মুসলিম ১৭১৮
সংক্ষিপ্ত সারাংশ
বিষয় শরীয়ত অনুযায়ী বৈধ শির্ক বিদ‘আহ
আল্লাহর নাম বা গুণ দ্বারা তাওয়াসসুল বৈধ ✅
নিজের নেক আমল দ্বারা তাওয়াসসুল বৈধ ✅
জীবিত নেক ব্যক্তির দো‘আ চাওয়া বৈধ ✅
মৃতের কাছে সাহায্য চাওয়া শির্ক ❌
নবীর বা ওলির মর্যাদার দোহাই দিয়ে দো‘আ করা বিদ‘আহ ❌